মনিরুল ইসলাম,সাপাহারঃ নওগাঁর সাপাহার উপজেলার জয়দেবপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহাকারী মৌলভী কামরুজ্জামানের বিপক্ষে প্রধান শিক্ষককে মারপিটের হুমকি, ক্লাশে অনুপস্থিত সহ নানাবিধ অনিয়ম ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিকে গালমন্দের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।এছাড়াও ওই সহকারী মৌলভীর বিরুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রী সহ স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ সরকারের খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারকে কটুক্তি করার বিষয় উঠে এসেছে সংবাদ সম্মেলনে।উপজেলার জয়দেবপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার আয়োজনে বুধবারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।এসময় উক্ত মাদ্রাসার সহকারীমৌলভী কামরুজ্জামানের নানাবিধ অনিয়ম ও তাকে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য রাখেন উক্ত প্রতিষ্ঠানের সুপারিনটেনডেন্ট আফতাব উদ্দীন ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ইসমাইল হোসেন। মাদ্রাসার সুপার আফতাবউদ্দীন তার বক্তব্যে বলেন, “ সহকারী মৌলভী কামরুজ্জামান উগ্র প্রকৃতির মানুষ। গত ২০০৮ সালে স্থানীয় কোন এক ব্যক্তির সাথে মারামারি করে প্রতিষ্ঠানের কাওকে কিছু না বলে পালিয়ে যায়। ১৫দিন পরে প্রতিষ্ঠানে ফিরে এসে একটি মেডিক্যাল সনদ দেখায়। বিষয়টি আমি তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করি। পরে তাকে ক্ষমা করা হয়। পরবর্তী সময়ে ২০১৫ সালে তার বাড়ীর সামনে দিয়ে আমি আসার পথে পথ অবরোধ করে দাঁড়িয়ে পারিবারিক সূত্রের জের ধরে আমাকে শারিরীক ভাবে লাঞ্চিত করে। পরে ভুল স্বীকার করলে তাকে ক্ষমা করা হয়। এভাবেই পারিবারিক সূত্রের জের ধরে প্রতিষ্ঠানে এরপ্রভাব ফেলে কতিথ ওই কামরুজ্জামান। শুধু তাই নয় বিভিন্ন সময় “একটু আসছি” বলে প্রতিষ্ঠান থেকে বের হয়ে যায় আর ফিরে আসে না। নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এসব বিষয়ে বেশ কয়েকবার কারন দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলে কোন নোটিশের সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেন না কামরুজ্জামান। বার বার তাকে ক্ষমা করা হয়। গত ১লা আগস্ট আবারো তার স্বরূপে ফিরে আসে। ক্লাশে যাবার কথা বলা হলে অকথ্য ভাষায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সামনে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে তাকে কারন দর্শানোর নোটিশ ও শোকজ করা হয়। আবারো ১০ আগস্ট চতুর্থ ঘন্টার পর আবারো উগ্র হয়ে গালিগালাজ শুরু করে। এমতাবস্থায় বাধ্য হয়ে আমি ব্যবস্থাপনা কমিটিকে বিষয়টি জানালে ২৯ সেপ্টেম্বর কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অভিযুক্ত কামরুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ইসমাইল হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, “উপরোক্ত ঘটনা পুরোটাই সত্য। আমি ২০১০ সাল থেকে কমিটির সভাপতির দ্বায়িত্ব পালন করছি। এরই ধারাবাহিকতায় ছাত্র/ছাত্রীদের বিদায় অনুষ্ঠানে ডিজিটাল বাংলাদেশেরে রূপকার জননেত্রী শেখ হাসিনার শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্পর্কে বক্তব্য দেই। সেসময় আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাননীয় খাদ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানালে ওই সহকারী মৌলভী বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী ও খাদ্যমন্ত্রীকে নিয়ে কটুক্তি করেন। বিষয়টি নিয়ে তাকে বলা হলে ভুল স্বীকার করলে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। কিন্তু তার আচরণ দিনের পর দিন উগ্র হতে উগ্রতর হচ্ছিলো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠনের প্রধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজ মনমতো চলছিলো। প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য শিক্ষকদের সাথেও আচরণ খারাপ করে আসছিলো। সে প্রতিষ্ঠানের নিয়ম না মেনে ইচ্ছেমতো চলাচল করায় আমরা একটি সভায় কার্যকরী সদস্যদের সম্মতিক্রমে গত ২৯ সেপ্টেম্বরে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করি। এই সূত্র ধরে গত ২ অক্টোবর চারজনকে আসামী বানিয়ে আদালতে ১০৭/১৫৪ ধারায় একটি মিথ্যে মামলা দায়ের করেন ওই শিক্ষক। আমরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়গুলো দেশ ও জাতির কাছে তুলে ধরলাম”। বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক কামরুজ্জামানের সাথে কথা হলে তিনি উপরোক্ত বিষয়গুলো অস্বীকার করেন। বঙ্গবন্ধু,প্রধানমন্ত্রী ও খাদ্যমন্ত্রীকে কটুক্তির বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে এড়িয়ে যান। এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে বারংবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক,শিক্ষার্থী, অবিভাবক ও মিডিয়াকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।