মাসুদ রানা পত্নীতলা প্রতিনিধিঃ “সত্য বল সুপথে চল ওরে আমার মন, সত্য সুপথে না চলিলে পাবিনা মানুষের দর্শন “সাঁইজির সেই চির সত্য বাণী প্রতিপাদ্য নিয়ে চল্লিশা উপলক্ষে নওগাঁর পত্নীতলায় সাধু সঙ্গ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) রাতে নজিপুর পলি পাড়া এলাকায় লালন একাডেমী/ আশ্রমের আয়োজনে একাডেমীর সভাপতি সমরেন্দ্র নাথ এর সভাপতিত্বে এ “সাধু সঙ ” অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কুষ্টিয়া লালন শাহ্ মাজারের সেবা বিভাগের ফকির মারজান হোসেন বাবলু সাই, এ সময় উপস্থিত ছিলেন একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক রাহেল আলম, পৌর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি গৌতম চন্দ্র দে, সাধারণ সম্পাদক মিল্টন উদ্দীন, একাডেমীর অন্যতম সদস্য ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বদিউজ্জামান বিলাশ, আশিস সরকার, ভবেশ সহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ভক্তবৃন্দরা প্রমূখ। কুষ্টিয়ার লালনের তিরোধাম অনুষ্ঠানের ঠিক চল্লিশ দিন পূর্ণ হলেই প্রতিবছর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসময় মহাত্মা ফকির লালন শাহ্ র জীবন আদর্শ আলোকপাত ও লালন সঙ্গিত পরিবেশন করা হয়। ইতিহাস হতে জানা যায় ফকির লালন শাহ ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী একজন বাঙালি যিনি ফকির লালন, লালন সাঁই, লালন শাহ, মহাত্মা লালন ইত্যাদি নামেও পরিচিত। তিনি একাধারে একজন আধ্যাত্মিক ফকির, সাধক, মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক এবং দার্শনিক তিনি অসংখ্য গানের গীতিকার, সুরকার ও গায়ক ছিলেন। লালনকে ফকিরি গানের অগ্রদূতদের অন্যতম একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং তার গানের মাধ্যমেই উনিশ শতকে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে। লালন ছিলেন একজন মানবতাবাদী সাধক। যিনি ধর্ম, বর্ণ, গোত্রসহ সকল প্রকার জাতিগত বিভেদ থেকে সরে এসে মানবতাকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছিলেন। অসাম্প্রদায়িক এই মনোভাব থেকেই তিনি তার গান রচনা করেছেন।তার গান ও দর্শন যুগে যুগে প্রভাবিত করেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও অ্যালেন গিন্সবার্গের মতো বহু খ্যাতনামা কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, বুদ্ধিজীবীসহ অসংখ্য মানুষকে। তার গানগুলো যুগে যুগে বহু সঙ্গীতশিল্পীর কণ্ঠে লালনের এই গানসমূহ উচ্চারিত হয়েছে। গান্ধীরও ২৫ বছর আগে, ভারত উপমহাদেশে সর্বপ্রথম, তাকে ‘মহাত্মা’ উপাধি দেয়া হয়েছিল। তাঁর জন্ম ও মৃত্যুর তারিখ একই জন্ম ১৭ অক্টোবর ১৭৭৪ সাল এবং মৃত্যু ১৭ অক্টোবর ১৮৯০ সাল। লালন ফকির লেখা পড়া কম জানতো কিন্তু মানুষ এখন তাকে নিয়ে গবেষণা করে। মনবতাই তার বড় পরিচয়।
সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে।
লালন বলে জাতের কি রূপ
দেখলাম না এই নজরে।।
কেউ মালায় কেউ তসবি গলায়,
তাইতে যে জাত ভিন্ন বলায়।
যাওয়া কিম্বা আসার বেলায়,
জাতের চিহ্ন রয় কার রে।।