সাদ্দাম হোসেন, নওগাঁঃ মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল বন্ধসহ দশ দফা দাবিতে নওগাঁয় শুরু হওয়া অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সকল বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে নওগাঁ জেলা মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মতিউজ্জামান মতি জানান। রাজশাহী বিভাগীয় পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকে বিভাগের ৮ জেলায় ধর্মঘটের অংশ হিসেবে নওগাঁয়ও ধর্মঘট চলছে বলে জানান এ শ্রমিক নেতা। তবে কাঁচামালসহ পণ্য পরিবহনে ট্রাক চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে ট্রাক পরিবহন মালিক পক্ষের নেতারা জানিয়েছেন। এদিকে বিএনপি নেতাদের ভাষ্য, শনিবার রাজশাহীতে তাদের বিভাগীয় সমাবেশে লোকজনের উপস্থিতি বাধাগ্রস্ত করতে এ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। যদিও পরিবহন নেতারা বলছেন, সমাবেশের সঙ্গে তাদের ধর্মঘটের কোনো সম্পর্ক নেই। পরিবহন ধর্মঘটে নওগাঁয়ও ভোগান্তি বাস বন্ধ থাকার সুযোগে জেলার বিভিন্ন রুটের সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারি চালিত যানবাহনের ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। মহাদেবপুর উপজেলায় কর্মস্থলে বাসেই যাতায়ায় করেন নওগাঁর বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম। দৈনিক বাসভাড়ায় ৪০ টাকা খরচ হলেও ধর্মঘটের কারণে অটোরিকশায় ভাড়া ২০ টাকা বেশি গুণতে হয়েছে বলে জানান। নওগাঁ থেকে মান্দা ফেরিঘাটগামী রহিম উদ্দিন বলেন, “এই রুটে বাসে ৫০ টাকা লাগে। কিন্তু ধর্মঘটের কারণে সকালে ৭০ টাকা দিয়ে অটোরিকশায় যেতে হয়েছে।” এছাড়া বিভিন্ন কাজে নওগাঁয় অফিস আদালতে আসা লোকজনও দুর্ভোগে পড়েছেন; দূর-পাল্লার বাস বন্ধ থাকায় চাপ বেড়েছে ট্রেনে। পরিবহন ধর্মঘটে নওগাঁয়ও ভোগান্তি জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সভাপতি সালাউদ্দিন আহমেদ টিপু বলেন, কাঁচামালসহ পণ্য পরিবহনে ট্রাক চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। “তবে ট্রাকে যেন মানুষ যাতায়াত না পারে, সে ব্যাপারে শ্রমিকদের নিদের্শ দেওয়া হয়েছে। নওগাঁ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নু বলেন, “বিএনপির সমাবেশ হলেই পরিবহন ধর্মঘট ডেকে সমাবেশে যেতে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। একই কারণে রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় সরকারের ইশারায় ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। “পুলিশ রাস্তায় চেকপোস্ট বসিয়ে নানা অজুহাতে সমাবেশে যেতে বাঁধা দিচ্ছে।” এতে কোন লাভ হবেনা জানিয়ে নান্নু বলেন,“সমাবেশ সফল হবে; মানুষজন হেঁটে সমাবেশে যোগ দেবেন।” তবে বিএপির অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মতিউজ্জামান মতি বলেন, “এ ধর্মঘটের সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। এটি আমাদের পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় ।”