গোলজার রহমান,ধামইরহাট প্রতিনিধিঃ নওগাঁর ধামইরহাটে রসে ভরা লিচুর ভরা মৌসুমে গত কয়েক মাস ধরে বৃষ্টির দেখা নেই। প্রকৃতিতে বৈরী আবহাওয়ার কারণে শুরু হয়েছে প্রচণ্ড তাপদাহ। ফলে বৃষ্টির অভাবে অতি খরায় বোটা থেকে ঝরে পড়ছে লিচু। এতে রীতিমতো আতঙ্কে পড়েছেন লিচু চাষী ও বাগানিরা।
শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) দুপুর বারোটায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। পানির অভাবে লিচুগুলো গাছেই শুকিয়ে যাচ্ছে। আলতো ছোঁয়া দিতে না দিতেই সেগুলো ঝরে পড়ছে মাটিতে। বাঁকি লিচুগুলো বড় না হয়ে আকারে ছোট আকার ধারণ করেছে। এ সপ্তাহে বৃষ্টির দেখা না মিললে ফলন ভালো হবে না এমনটাই জানিয়েছেন লিচু চাষিরা।
উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, এবছর ৫৫ হেক্টর জমিতে লিচু চাষের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে। উপজেলায় ছোট বড় প্রায় সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ লিচুর বাগান রয়েছে। এসব বাগানে চায়না থ্রী, বোম্বে, মাদ্রাজি, বেদনা, মোজাফফরি ও দেশি যাতের লিচু উল্লেখযোগ্য।
পৌরসভার নয় নম্বর ওয়ার্ড হাটনগর এলাকার লিচুবাগানী আবু ইউসুফ মোর্তজা বলেন, ‘এবছর ১৯৬ শতাংশ জমিতে লিচুর বাগান গড়ে তুলেছেন তিনি। এতে ১৬০ টি চায়না থ্রী লিচুর গাছ রয়েছে। মুকুল ধরা থেকে লিচু বিক্রি পর্যন্ত লেবার, বিষ, পানি সেচসহ প্রতিবাগান পরিচর্যায় তাকে খরচ করতে হবে ৫২ থেকে ৫৫ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে বাগান থেকে প্রতিমৌসুমে সাড়ে তিন থেকে চার লক্ষ টাকা আয় করা সম্ভব। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে যেভাবে লিচু ঝরে পড়ছে তাতে করে লেবার খরচসহ আনুষঙ্গিক খরচ কিভাবে মেটাবেন তা নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বলে তিনি।‘
অপর কৃষক আবু কায়ছার বলেন, এবছর লিচুরফলন ভালো হলেও দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় প্রতিদিন গাছ থেকে ঝরে পড়ছে লিচু। বিভিন্ন ওষুধ ছিটিয়েও লিচুর ঝরে পড়া রোধ করা যাচ্ছে না। শুধু তাই নয় গাছেই সুখে যাচ্ছে। আকারেও অনেক ছোট হচ্ছে। এমন অবস্থায় ভরা মৌসুমেও লাভের মুখ দেখতে পারবেন কিনা হতাশায় দিন কাটছে তাদের।‘
উপজেলা কৃষি অফিসার তৌফিক আল জুবায়ের সময়ের আলোকে বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর প্রতিটি ডালে লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। রোগ বালাইও তেমন নেই। তবে অতি খরায় গাছ থেকে লিচু পড়া রোধে চাষীদের নিয়মিত পানি সেচ, বিভিন্ন ধরনের অণু খাদ্য ও কীটনাশক প্রয়োগের জন্য কৃষি অফিস থেকে লিচু চাষীদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এতে করে কৃষকেরা উপকৃত হবেন বলে জানান।