মনিরুল ইসলাম,সাপাহার প্রতিনিধি: নওগাঁর সাপাহারে গোলাম মোস্তফা চৌধুরী ওরফে জিএম চৌধুরী নামে এক ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তারকে আটক করে ইউনিয়ন পরিষদে সোপর্দ করেছেন স্থানীয় লোকজন। ভুয়া ডাক্তার জিএম চৌধুরী পত্নীতলা উপজেলার শিবপুর বাজারের জামাল উদ্দীনের ছেলে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার সকালে উপজেলার আশড়ন্দ বাজারে জননী ফার্মেসীতে ভারত থেকে ডিগ্রীধারী ডাক্তার ৪শ” টাকা ফি নিয়ে চিকিৎসা প্রদান করছেন এমন খবর পান স্থানীয়রা। পরে ডাক্তারের আচার আচরণে স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা ডাক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে কথিত ডাক্তার ভারত থেকে পাশ করা এমবিবিএস ও এমডি (মেডিসিন)’র সনদ দেখান। সেই সনদ দেখার পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ভুয়া ডাক্তার এই মর্মে স্বীকার করেন। পরবর্তী সময়ে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকগণ তথ্য নিতে গেলে সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে জননী ফার্মেসীর মালিক চতুরতার সাথে ওই ভুয়া ডাক্তারকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে ফেলেন।
এছাড়াও ওই ফার্মেসীতে এর আগেও ভুয়া ডাক্তার এনে চিকিৎসা করানোর অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। পরে স্থানীয়রা তাকে খুঁজে বের করে আইহাই ইউনিয়ন পরিষদে সোপর্দ করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন বলেন,“গতকাল ডাক্তারের মাইকিং প্রচার শুনে আমাদের সন্দেহ হয়। পরে আজকে চিকিৎসা করাকারীন সময়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ভুয়া ডাক্তার হিসেবে প্রমানিত হয়।”
কথিত ডাক্তার জিএম চৌধুরীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন “ আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি ১৯৮১ সালে এসএসসি পরে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছি। তিনি ভুয়া ডাক্তার এটি স্বীকার করে বলেন, আমি এই ধরণের ভুল আর করবোনা।” ফার্মেসীর মালিকের সাথে চুক্তির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন “ ফার্মেসীর মালিক খলিলুর রহমান আমার স্থানীয় চেম্বারে গিয়ে আমার সাথে রোগী প্রতি ১শ’ টাকা ও তার ফার্মেসীতে থাকা ওষুধ লিখতে হবে এম চুক্তিতে তার ফার্মেসীতে বসেছি।”
তবে এই বিষয় অস্বীকার করে ফার্মেসীর মালিক খলিলুর রহমান বলেন “ আমি এক ওষুধ কোম্পানীর রিপ্রেজেন্টেটিভের মাধ্যমে এই ডাক্তারের খোঁজ পাই এবং বিনা শর্তে তাকে ফার্মেসীতে বসতে দেই।”
ওই ডাক্তারের সনদগুলো সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ রুহুল আমিনকে দেখানো হলে তিনি বলেন “ তার সব সনদ দেশের বাইরের । তবে বিএমডিসি’র রেজিষ্ট্রেশন ছাড়া সে কোন চিকিৎসা করতে পারবেন না।” পরে কথিত ডাক্তারের নিকট বিএমডিসি’র রেজিষ্ট্রেশন আছে কিনা তা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি রেজিষ্ট্রডি নন তা স্বীকার করেন। এই মর্মে ডা. রুহুল আমিন তাকে ভুয়া ডাক্তার বলে আখ্যায়িত করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্যাহ আল মামুনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই ভুয়া ডাক্তার আইহাই ইউনিয়ন পরিষদ হেফাজতে রয়েছেন বলে জানা গেছে।