গোলজার হোসেন,ধামইরহাট প্রতিনিধিঃ শস্য ভান্ডার খ্যাত বরেন্দ্র অঞ্চল নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলা। সীমান্ত ঘেঁষা এ উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া না হওয়ার কারণে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। খোলা আকাশের নিচে বিস্তৃত মাঠে যেনো পাকা ধানের শীষে দোল খাচ্ছে কৃষকের হাসি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক ফসল ঘরে তুলবেন এমনটাই স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। অন্যদিকে হাটবাজারে ভালো দাম পাবেন এমন আশায় বুক বেঁধেছেন তারা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় ১৮ হাজার ৭২৫ হেক্টর বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ২২০ হেক্টর হাইব্রিড ও ১৭ হাজার ৫৩৫ হেক্টর জমিতে উফশী (উচ্চ ফলনশীল) জাতের ধান। রোপন করা হয়েছে ১৮ হাজার ৭৫৫ হেক্টর মেট্রিক টন। শিলা বৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে উচ্চ ফলনশীল (হাইব্রিড) জাতের ধান থেকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক ফলন অর্জিত হবে।
শনিবার (৬ মে) দুপুর সাড়ে বারোটায় উপজেলার আলমপুর ইউনিয়ন, খেলনা, ইসবপুর, জাহানপুর, ধামইরহাট, উমার, আড়ানগর ও আগ্রাদ্বীগুন ইউনিয়ন এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠে বোরে ধানের বাম্পার ফলন লক্ষ্য করা গেছে। ফসলের ক্ষেতে শোভা পাচ্ছে সোনালী রঙের ধান। কৃষি অফিসের পরামর্শে চাড়া রোপন, সার, বিষ ও নিয়মিত পরিচর্যার কারনে এবার উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে এমনটাই জানিয়েছেন কৃষকরা।
স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর শিলা বৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়া ও অতি খরার কারণে বোরো ধানক্ষেতে পোকামাকড়ের অত্যাচার ও রোগবালাই কম হয়েছে। ফলে আকার ভেদে ৪৯ শতাংশ জমিতে ৩৮ থেকে ৪২ মন ধান ঘরে তুলতে পেরেছেন। ধান কাটা, মারায়, পরিবহন ও বিষসহ সব বাদ দিয়ে প্রতি শতাংশ জমিতে তাদের খরচ করতে হয়েছে ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। হাটবাজারে প্রতিমন কাঁচা ধান ১ হাজার ৮০ থেকে ১১শ টাকায় বেচাকেনা হওয়াতে সংসারের খরচ মিটিয়ে দেনা পাওনা পরিশোধ করতে পারবেন তারা।
পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড হাটনগর এলাকার চাষি ইউসুফ মুর্তজা বলেন, ‘ এবছর ৪ একর জমিতে জিরাশাইল ধানের চাষাবাদ করেছেন। প্রতি একর জমিতে ৮০ মন করে মোট ৩২০ মন ধান পেয়েছেন যা গত বছরের চাইতে অতিরিক্ত ৮০ মন। এতে সার, বিষ, কীটনাশক, সেচ, লেবারসহ খরচ করতে হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার ৪০০ টাকা। অপরদিকে তিনি আয় করেছেন ১ লাখ ৬১ হাজার ৬০০ টাকা।‘
উপজেলা কৃষি অফিসার তৌফিক আল জুবায়ের সময়ের আলোকে বলেন, ‘বোরো মৌসুমে কালবৈশাখী এবং শিলা বৃষ্টি না হওয়ায় বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলায় সীমিত আকারে জিরাসাইল, ব্রি-ধান ২৮ ও ব্রি-ধান ১০০ কাটা শুরু হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে পুরোদমে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান কাটা শুরু হবে। ধান কাটা ও মাড়াই পুরোপুরি শেষ হবে মে মাসের ২০ তারিখের মধ্যে