গোলজার রহমান,ধামইরহাট প্রতিনিধিঃ নওগাঁর ধামইরহাটে ভুট্টার বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রোগ বালাই কম ও ফলন ভালো হওয়ার পাশাপাশি খুচরা ও পাইকারি বাজারে বেড়েছে এর চাহিদা। হাটবাজারে ভালো দাম পাওয়ার আশায় গাছ থেকে ভুট্টা সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
মঙ্গলবার (৩০ মে) দুপুর সাড়ে ১২ টায় উপজেলার জাহানপুর, ইসবপুর, আলমপুর ও ধামইরহাট ইউনিয়ন এলাকায় ব্যাপক হারে ভূট্টার চাষাবাদ লক্ষ্য করা গেছে। এসব এলাকায় ভালো ফলনের সঙ্গে দামও ভালো পাবেন এমন আশায় বুক বেঁধেছেন তারা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবছর উপজেলায় ৩৩ শতাংশ জমিতে ভূট্টা চাষের উপর প্রণোদনা হিসেবে ৩০০ জন কৃষককে মাথাপিছু ভূট্টার বীজ ২ কেজি, ডিএপি ২০ কেজি ও এমওপি সার ১০ কেজি বিতরণ করা হয়েছে। এবং কৃষক পর্যায়ে প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে ভূট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধানের চাইতে ভূট্টা চাষ করা বেশি লাভজনক। অল্প পরিশ্রমে বেশি ফলন পাওয়া যায়। তাছাড়া এর চাহিদা ও ব্যাপক। হাটবাজারে শুকনা ভুট্টা ১০০০ টাকা আর কাঁচা সাড়ে ৮০০ টাকা মন। কৃষকদের কথা ভেবে বাজার মনিটরিংদের জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন তাঁরা।
জাহানপুর ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড নানাইচ এলাকার ভুট্টা চাষী জিয়াউল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ষাট শতাংশ জমিতে ভুট্টার বীজ রোপন করেন। এতে সার, বিষ, লেবার ও পানি সেচসহ সব বাদ দিয়ে খরচ পড়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। খুচরা বাজারে ১০০০ টাকা মন দরে এ ফসল থেকে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন বলে জানান।‘
ইসবপুর ইউনিয়নের তাহেরপুর গ্রামের কৃষক গোলাম কিবরিয়া জানান, ‘কৃষি প্রণোদনার আওতায় সার, বীজ পেয়ে ৩৩ শতাংশ জমিতে ভুট্টা চাষাবাদ করেছেন। এতে তার গড় ফলন হয়েছে ১২ দশমিক ৮৫ হেক্টর (৪২ দশমিক ৯২ মণ) মেট্রিকটন। হাটবাজারে ভালো দামে বিক্রয় করতে পেরে তিনি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছেন।‘
উপজেলা কৃষি অফিসার তৌফিক আল জুবায়ের বলেন, ‘ভূট্রা অর্থকারী দানা জাতীয় শস্য হওয়ায় ধানের চেয়ে অনেক বেশি লাভজনক। বর্তমানে কাভেরি এইচবি-৫৪৪, এনএইচ-৭৭২০ ও সুপারহিট হাইব্রিড় জাতের ভূট্টা চাষ করা হয়। যার ফলন হেক্টর প্রতি সর্বনিম্ন ১২ মেট্রিক টন। রবি ও খরিপ উভয় মৌসুমে ভূট্রার চাষ করা হয়। এবং মে-জুন মাসে কর্তন করা হয়। বর্তমানে হাটবাজারে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা মন দরে ভুট্টার কেনাবেচা চলছে।