নওগাঁ প্রতিনিধিঃ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম ফজলে রাব্বী (বকু) এর নির্দেশে সদস্য জাকির হোসেনকে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা পরিষদের নির্বাচিত ১৫ জন সদস্যরা । বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) বিকেল ৩ ঘটিকায় ৩ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য ও প্যানেল -১ আজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য জেলা পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য গোলাম নূরানী আলাল বলেন,৩১/০৭/২০২৩ তারিখ দুপুর ১২ টায় জেলা পরিষদের মাসিক মিটিং ছিল। মিটিং এ চেয়ারম্যানের অনুমতিক্রমে জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বের রেজুলেসন পাঠ করে শুনান। যা আমাদের জানা ও সম্মতিও ছিলো না।সেই ক্ষেত্রে একটি সিদ্ধান্ত ছিল জেলা পরিষদের নিজস্ব তহবিলের শিক্ষা বৃত্তি ২৬,৯০,০০০ টাকা ২৬৯ জন মেধাবী ছাত্র/ছাত্রীদের মধ্যে বিতরণের জন্য চেয়ারম্যান একক সিদ্ধান্ত নেন। আরো ১৪,২৭,০০০ টাকা সমাজ কল্যাণ বিষয়ে সে একক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।সভায় তার এই অনিয়ম প্রতিবাদ করায় সদস্য নূরানী আলাল কে সভা হতে বের দেয়ার কথা বলে। তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে ফোন করে কয়েকজন যুবকদের জেলা পরিষদে আসতে বলে। এসময় জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য জাকির হোসেন হলরুমের পাশে টয়লেটে জান। ঠিক ওই সময় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ফোন কলে ডেকে আনা জাহাঙ্গীর সহ- ওই টয়লেটের বাহিরে অবস্থান নেয়। জাকির হোসেন টয়লেট থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে জাহাঙ্গীর নামের একজন সহ অজ্ঞাত আরো ৫ থেকে ৬ জন তাকে ঘিরে ধরে এবং এলোপাতাড়ি কিল ঘুসি মারতে থাকে। এ সময় জাকির আত্মরক্ষার্থে ছুটা ছুটি ও ডাক চিৎকার করতে লাগলে জাহাঙ্গীর তার পকেট থেকে চাকু বের করে হত্যার উদ্দেশ্য আঘাত করলে জাকির হাত দিয়ে প্রতিহত করেন। এসময় জাকিরের চিৎকার শুনে আমরা সকল সদস্য এগিয়ে আসি। উক্ত ঘটানার প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসলে মহিলা সদস্য জাকিয়া সুলতানা কেও ধাক্কা দেন তারা। পরে জাহাঙ্গীর সহ অজ্ঞাত পালিত গুন্ডারা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের রুমে অবস্থান নেন। এবং এর কিছুক্ষণ পড়ে চেয়্যারম্যান তার নিজ গাড়ি করে হামলাকারীদের নিয়ে পরিষদ ত্যাগ করেন।
উক্ত হামলার ঘটনাটি পুরো সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়। ঘটনাটির সত্যতা জানতে সিসি ক্যামেরার ভিডিওটি চাওয়া হলে ওই সময় বিদ্যুৎ ছিলনা বলে কোন ভিডিও রেকর্ড হয়নি বলে জানান চেয়ারম্যান। কিন্তু জানা যায় ওই সময় বিদ্যুৎ ছিল এবং পুরো ঘটনা সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড ছিল। নিজের দোষ ঢাকতে ভিডিও ফুটেজ না দেয়ার জন্য চেয়ারম্যান এই মিথ্যা পাইতারা করেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্য তারা আরো দাবি জানায় তারা। ১,আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে একটি জরুরী সভা আহবান করতে হবে ২, জাহাঙ্গীর আলমের ঠিকাদারি লাইসেন্স কালো তালিকা ভুক্ত করতে হবে। ৩,জেলা পরিষদ চত্বর সন্ত্রাস ও বহিরাগত মুক্ত করতে হবে। ৪, জেলা পরিষদের সকল কাজ সমন্বয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে।
এসময় উপস্থিত অন্যান্য সদস্যরা তাদের বক্তব্যে বলেন, চেয়ারম্যান একেএম ফজলে রাব্বী বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িত। তিনি উগ্র মেজাজি ও আত্মঅহংকারী একজন মানুষ। তার কিছু পালিত গুন্ডা মাস্তান রয়েছে যারা সব সময় তার সাথে থাকে। জেলা পরিষদের সকল সিদ্ধান্ত সে একাই নিয়ে থাকে। কোন সদস্যকে জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন মনে করেন না। তার নির্ধারিত কিছু ঠিকাদার আছে যারা ছাড়া আর কেউ তার সাথে কাজ করার সুযোগ পায় না। এ সময় বক্তারা আরো বলেন অবিলম্বে আমাদের উক্ত দাবি মেনে নিয়ে জেলা পরিষদকে সচ্ছ ও দুর্নীতি মুক্ত করা হোক।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বী সাথে যোগাযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা যার কোন ভিত্তি নেই। তবে আমি শুনেছি সেখানে চিৎকার চেচামেচি হয়েছে। এঘটনার একটি মামলা হয়েছে। তদন্তে করলেই সঠিক তথ্য বের হয়ে আসবে।