ক্রান্তিলগ্নে বাঙ্গালি জাতিকে সঠিক নেতৃত্ব দিয়ে যিনি দেশকে গৌরবের আসনে সমাসীন করেছেন, তিনি হলেন সফল রাষ্ট্রনায়ক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর অসাম্প্রদায়িক উদারতা, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, বিজ্ঞান মনষ্ক দৃষ্টিভঙ্গি তাঁকে দিয়েছে আধুনিক ও অগ্রসর রাষ্ট্রনায়কের স্বীকৃতি। একুশ শতকের অভিযাত্রায় দিনবদল ও জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার একজন কান্ডারী। তাঁর জন্মদিন ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার। জন্মলগ্নে বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন কলকাতার ভারতভাগের পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও দাঙ্গা প্রতিরোধ এবং লেখাপড়ায় ব্যস্ত। দাদা তাঁর নাম রাখেন হাসিনা। প্রথম সন্তান মেয়ের জন্মের খবর পেয়ে হঠাৎ একদিন বাড়ি আসেন বাবা শেখ মুজিব। মেয়েকে কোলে তুলে নিয়ে হাসুমণি বলে ডাকেন, ছোট্ট পরীর কপালে এঁকে দেন স্নেহের চুম্বন, সুযোগ্য পিতার যোগ্য কন্যা।
বঙ্গবন্ধুর আদরের সেই ছোট্ট হাসুমণিই বড় হয়ে বাংলাদেশের জনমানুষের প্রিয় নেত্রী হয়ে উঠলেন। এখন তিনি বিশ্বে ও প্রভাবশালী নারী শাসকদের মধ্যে অন্যতম একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন কেবল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তথা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালির স্বপ্নগুলোকে বাস্তবায়ন করতে। সেই স্বপ্নটি বাংলার প্রতিটি মানুষের জন্য আধুনিকতম জীবন-যাপন নিশ্চিত করা, জাতি হিসেবে বাঙ্গালির সর্বোচ্চ মর্যাদা ও সম্মানে বিশ্বে এক আদর্শ জাতি হিসেবে অধিষ্ঠিত হবে।
তাই ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ আধুনিক বাংলাদেশের ছবি এঁকে দিয়েছেন জাতির হৃদয়ে। পিতার মতো হিমালয়সম আত্মবিশ্বাস তাঁকে শত প্রতিকূলতা অতিক্রম করতে শিখিয়েছে। কাজেই যে চ্যালেঞ্জই আসুকনা কেন তা মোকাবেলা করার মতো সক্ষমতা রয়েছে। শুধু দেশের উন্নয়নই নয় বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় শেখ হাসিনার ভূমিকা আজ সারাবিশ্বে প্রশংসিত। পিতার মতো মানুষের প্রতি বিশেষ করে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটা বাসযোগ্য পৃথিবীর জন্য, তাইতো সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘ছাড় পত্র’ কবিতাংশ থেকে উদ্ধৃত করেন –
” চলে যাবো তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রাণপণে পৃথিবীর সরাবো জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এই শিশুর বাসযোগ্য করে যাবো আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।”
শেখ হাসিনা সরকার সফলতার সাথে টানা তৃতীয় মেয়াদের পাশাপাশি চতুর্থবারের মতো দেশ পরিচালনা করছে।স্বাধীনতার প্রায় চারদশক পরে শেখ হাসিনা বাঙ্গালি জাতিকে বুঝিয়ে দিলেন যুদ্ধপরাধ কী? যুদ্ধপরাধের বিচার হওয়া কেন জরুরী? ১৯৭১ সালের যুদ্ধপরাধের বিচার না হলে ইতিহাসের দায় শোধ হবেনা। তিনি দৃঢ প্রত্যয়ে ঘোষনা করেছিলেন,”বাংলার মাটিতে যুদ্ধপরাধের বিচার হবেই, হবে।” শেখ হাসিনা আছেন বলেই বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার হয়েছে। একমাত্র শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেছিলেন বলেই নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে। শেখ হাসিনা আছেন বলেই ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষ আজ তাদের আপন ঠিকানা পাচ্ছেন।
শেখ হাসিনা অসহায় বিধবা নারীদের কথা চিন্তা করে বিধবা ভাতা চালু, বয়ষ্কদের চিন্তা করে বয়ষ্ক ভাতা চালু করেছেন। শেখ হাসিনা আছে বলেই ভারতের সাথে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন, ছিটমহল বিনিময়, বঙ্গবন্ধু ও স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনের মধ্য দিয়ে মহাকাশ জয়,সাবমেরিন যুগে বাংলাদেশের প্রবেশ, রোহিঙ্গাদের আশ্রয়, করোনা মোকাবেলা, পদ্মা সেতুর মাঝামাঝি মেট্রোরেল, রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কর্ণফুলী ট্যানেল, নতুন নতুন উড়াল সেতু, মহাসড়কগুলোতে চার লেনে উন্নীতকরণ সহ একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। বতর্মান সময়কে ধারণ করে আগামী প্রজন্মের অধিকার নিশ্চিত করার মতো দিক-নির্দেশনা দিতে পারারমতো অসাধারণ সক্ষমতার জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আগামী প্রজন্মের নিকট কালজয়ী নেতৃত্ব হিসেবে বিবেচিত হবে। সর্বোপরী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বদৌলতেই বাংলাদেশ উন্নয়নের অভিযাত্রায় অদম্য দূর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আমাদের প্রজন্মের দেখা সেই সফল রাজনীতিবিদের একমাত্র উদাহরণ। বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনার দর্শন সর্বকালের জন্য অপরিহার্য বলে বিবেচিত হবে।
এমন নেতৃত্বের জন্মদিন সমগ্র জাতির জন্য আনন্দঘন শুভক্ষণ! সমগ্র বাঙ্গালি জাতির পক্ষ থেকে শান্তির অগ্রপথিক প্রিয় নেত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করছি। আওয়ামীলীগের প্রাণ কান্ডারী, গণমানুষের ভরসাস্থল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে অন্তর থেকে জানাই অফুরন্ত শুভেচ্ছা, অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
– মুসফিকা নাজনীন
মহিলা বিষয়ক সম্পাদক
আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ
নওগাঁ জেলা শাখা।