নওগাঁ নিউজ ডেস্কঃ নওগাঁয় উজান থেকে নেমে আসা ঢলে হু-হু করে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। এতে ভাঙতে শুরু করেছে নদী তীরবর্তী বাঁধ ও বেড়িবাঁধ। গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে জেলার ৫টি উপজেলার অন্তত ৮টি স্থানে বাঁধ সংলগ্ন সড়ক ও বেড়িবাঁধ ভেঙে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ১০ হাজার পরিবার। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বন্যাকবলিত এলাকার বাসিন্দারা। ভেসে গেছে অর্ধশতাধিক পুকুরের মাছ। ডুবেছে কয়েকটি মাঠের হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সকাল ৯টার পর থেকে শহরের ছোট যমুনা নদীর লিটন ব্রিজে বিপদসীমার ২৬ সেন্টিমিটার, ধামইরহাট উপজেলার আত্রাই নদীর শিমুলতলি ব্রিজে ৩ সেন্টিমিটার, মান্দার আত্রাই নদীর জোতবাজার পয়েন্টে ৫৪ সেন্টিমিটার, আত্রাই উপজেলায় আহসানগঞ্জ রেলওয়ে ষ্টেশন পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচস্থানীয়রা জানান, গত ১০ দিনের ব্যবধানে জেলায় অন্তত চারদিন টানা বৃষ্টিপাত হয়েছে। অন্যদিকে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে আত্রাই নদী ও ছোট যমুনা নদীর পানি ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এতে নদী তীরবর্তী এলাকার বাঁধ ও বেড়িবাঁধগুলোতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ভাঙন এড়াতে বস্তা ফেলেও শেষ পর্যন্ত শেষ রক্ষা হয়নি।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল বলেন, উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ক্রমাগত জেলার নদ-নদীর পানি বেড়েই চলেছে। এখন পর্যন্ত জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীন ৫টি পয়েন্টে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙেছে। সেগুলো মেরামত অব্যাহত আছে। এছাড়া যেসব স্থান ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে সেগুলো পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩টি সড়কসহ বাঁধ ও একটি বেড়িবাঁধ ভেঙে উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের ৬ সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বাঁধগুলো ভাঙার পর থেকেই দ্রুত মেরামতে কাজ করছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। এরই মধ্যে ৩টি বাঁধ মেরামত করা হয়েছে। বাকী একটি বেড়িবাঁধসহ ভেঙে যাওয়া অন্যান্য সড়কগুলো মেরামতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নওগাঁর জেলা প্রশাসক গোলাম মওলা বলেন, উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে জেলার আত্রাই, রাণীনগর, মান্দা, মহাদেবপুর, সাপাহার এবং নওগাঁ সদর উপজেলার অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এখানে হাজারো পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্রমাগত নদীর পানি বেড়েই চলেছে। সেই সঙ্গে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। তাই বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত খাদ্য সহায়তা প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।