মুজাহিদ হোসেন, বদলগাছী প্রতিনিধিঃ নওগাঁর বদলগাছীতে বাজি ধরে ২ কেজি গুড় ও কাঁচা মরিচ খেয়ে মো, বায়োজিদ (৪৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বুধবার ১ নভেম্বর জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে তার মৃত্যু হয়। এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে গুড় খেয়ে অসুস্থ হয় সে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কোলা ইউপির ভান্ডারপুর এলাকায়। মৃত বায়োজিদ উপজেলার পারআধাইপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার ৩১ অক্টোবর দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার ভাণ্ডারপুর বাজারে পারআধাইপুর গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলের সাথে ইসমাইলপুর গ্রামের দুলাল হোসেন লবার ছেলে বিতু কসাই এর মধ্য গুড় খাওয়া নিয়ে বাজি হয়। বাজি অনুযায়ী বিতু কসাই স্থানীয় এক দোকানির কাছ থেকে ২কেজি দানার গুড় কিনে এনে কৃষক বায়োজিদকে খেতে দেয়। বাজিতে দুই কেজি গুড় বায়োজিদ খেতে পারলে তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য আরও দুই কেজি গুড় কিনে দিবে বিতু কসাই। দুজনের কথা অনুযায়ী গুড় খাওয়ার বাজি খেলা শুরু হয়।
আধাঘণ্টার ব্যবধানে দুই কেজি গুড় খেয়ে ফেলে বায়োজিদ নামের ব্যক্তি এবং গুড়ের সাথে কাঁচা মরিচ খেয়ে ফেলেন । বাজি ধরার পূর্বে ৪ টি কলাও খেয়ে ছিলেন তিনি। অপর দিকে বাজিতে জয়ের পর আরও দুই কেজি গুড় দেওয়ার কথা থাকলেও বিতু কসাই তা না দিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায় অন্যত্র। এসময় গুড় খাওয়ার বাজি দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় জমাই সেখানে।
বাজি ধরে গুড় খাওয়ার পর সচেতন মহলের একাধিক ব্যক্তি তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্ক জানতে চায় এবং তাকে স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেন কিন্তু বাজিতে জয়ী ঐ কৃষক তার তার শরীরের অবস্থা ভালো বলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। বাজি শেষে স্বাভাবিক অবস্থায় বাজার থেকে বাড়িতে চলে যান।বাড়িতে যাওয়ার কিছু পর অসুস্থ অনুভব করলে পরিবারের লোকজন তাকে আক্কেলপুর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঐ কৃষকের মৃত্যু হয় বলে স্থানীয়রা জানান।
মঙ্গলবার রাতে ভাণ্ডারপুর বাজারে বিতু কসাইয়ের খুব বেশি জোড়াজুড়িতে তার সাথে এক পর্যায়ে গুড় খাওয়ার বাজিতে রাজি হয় বায়োজিদ ।
বাজিধরে খাবার খাওয়া এটাই যে, শেষ খাবার! জানলে হয়তো বায়োজিদ বাজিধরে ২ কেজি গুর কাঁচা মরিচ ও ১ হালি কলা কখনোই খাইতেন না।
বুধবার বায়োজিদের গ্রামের বাড়িতে তার মৃতদেহ এক পলক দেখতে হাজারও লোক ভিড় জমিয়েছে। নিহত বায়োজিদ এর গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতন।
রিপন, বাবুসহ আরও অনেকে জানান, বায়োজিদ ইতিপূর্বেও বিভিন্ন জনের সাথে খাবার খাওয়া নিয়ে নানা সময়ে বাজি ধরে বাজিতে জিতেছে। সরেজমিনে বিকেল সাড়ে ১ টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, তার দাফন প্রক্রিয়া চলছে। কথা হয় বাড়িতে অবস্থান করা একাধিক নারীর সাথে। তারাও জানালেন তার বাজির অভ্যাসের ব্যাপারে। তবে তার মৃত্যুর পর বিষয়টি মিমাংসা হয়েছে বলে জানালেন একাধিক নারী।
বিতু কসায়ের নিকট এবিষয়ে জানার জন্য তার বাড়ীতে গেলে বাড়ীতে না থাকায় এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার কাছ থেকে কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
কোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো শাহীনুর ইসলাম স্বপন বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। সে বিভিন্ন সময় বাজি ধরে এসব করতেন।
বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাঃ আতিয়ার রহমান মুঠোফোনে বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি যদি কোন অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।