গোলজার রহমান,ধামইরহাট প্রতিনিধি:
নওগাঁর ধামইরহাটে একমাত্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় যা ধামইরহাট প্রধান বাজার হতে ১ কিলোমিটারেরও কম দুরত্বে চকময়রাম নামক এলাকায় অবস্থিত। এই বিদ্যালয়ের পুরো নাম ‘চকময়রাম সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়’।
এই বিদ্যালয়ের একমাত্র লক্ষ্যই হলো উপজেলার সকল কার্যক্রমে বিজয়ী হওয়া। শুধুমাত্র লেখাপড়া আর ফলাফলের ভিত্তিতেই নয় বিভিন্ন শিক্ষামূলক প্রতিযোগিতা, খেলাধুলা, রোভার স্কাউট, ডিসপ্লে প্রদর্শনসহ উপজেলার সকল প্রতিযোগিতায় বরাবরের মতো সুনাম ও গৌরবের সহিত এই বিদ্যালয় ভাল ফলাফল বয়ে আনে।
সেই লক্ষ্যেই শনিবার (৯ ডিসেম্বর) উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে আন্ত:বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার ৪৩ টি দলের মধ্যে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নেয় এই বিদ্যালয়।
সামাজিক ও সেচ্ছাসেবী সংগঠন চিরি পাড়ের যুব সমাজ কর্তৃক আয়োজিত ‘যুক্তিই হোক মুক্তির পথ’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এই চূড়ান্ত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ‘বর্তমান বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সংস্কারের চাইতে সামাজিক সংস্কার অধিক জরুরি’ বিষয়ের উপর সরকারি দল হিসেবে ধামইরহাট সফিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও বিরোধী দল হিসেবে চকময়রাম সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের বিতর্কিত লড়াই চলে। চূড়ান্ত পর্বের এই লড়াইয়ে ধামইরহাট সোফিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সাথে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় তুমুল বিতর্কিত লড়াইয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনে এই বিদ্যালয়। এই প্রতিযোগিতায় বিরোধী দলের হয়ে অংশ গ্রহণ করে চকময়রাম সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী দিলরুবা খানম দোলা (দলনেতা), সাদমান আব্দুল্লাহ শাকিক ও জাকিয়া সুলতানা। প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ বক্তা হিসেবে নির্বাচিত হয় বিজয়ী দলের জাকিয়া সুলতানা।
ভারতের বর্ডার ঘেঁষা প্রত্যন্ত এলাকার একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে এই প্রতিযোগিতায় ঢাকা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, অধ্যাপকসহ বড় বড় গুণী বিচারকদের সামনে কোন প্রকার স্নায়ুচাপ ছাড়াই এত সুন্দর ও সাবলীলভাবে বিতর্ক প্রতিযোগিতার মূল বিষয় উপস্থাপন করে বিজয় ছিনিয়ে আনবে সেটা সত্যিই অনেক সাহসের। আর এই সাহস শুধু এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দ্বারাই সম্ভব। আর এই সবকিছু সম্ভব হয়েছে এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম খেলাল-ই-রব্বানী’র জন্য। তার অক্লান্ত পরিশ্রম, অনবদ্য প্রচেষ্টা ও দৃঢ় মনোবল, তিক্ষ্ণ বুদ্ধিদীপ্তির কারনে আজ এই বিদ্যালয়ের এত সাফল্য গাঁথা।
এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক এস এম খেলাল-ই-রব্বানী বলেন, বিচারকদের অতিশয় প্রজ্ঞা এবং নিখুঁত দৃষ্টির প্রেক্ষাপটে অত্র চকময়রাম সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের বিতার্কিক দল চ্যাম্পিয়ান হবার গৌরব অর্জন করায় আমরা আল্লাহর নিকট লাখো শুকরিয়া আদায় করছি। আমরা প্রতিটি প্রতিযোগিতায় শীর্ষে ছিলাম, আছি এবং থাকতে যেনো পারি এজন্য সকলের নিকট দোয়া কামনা করেন।
উক্ত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে ছিলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. চৌধুরী মহম্মদ জাকারিয়, সেতু বিভাগের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) জনাব সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সচিব জনাব মোঃ হুমায়ুন কবীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম মোস্তফা আল মামুন।
এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন, ধামইরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা. আসমা খাতুন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোসা. জেসমিন আক্তার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড.আতোয়ার রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোস্তফা জাহিদ, লালমনিরহাট এলজিইডি সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মো. আলী হোসেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি মনোয়ার লিটন, চকময়রাম সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম খেলাল-ই-রব্বানী, ধামইরহাট সোফিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুর রহমান, চিরি পাড়ের যুব সমাজ সংগঠনের সভাপতি আবাবীল মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক মো.মাবুদ হোসেন প্রমুখ।