গোলজার রহমানঃ
নওগাঁর ধামইরহাটে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল হক (৭৩) কে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অফ অনার প্রদান করা হয়েছে। এ সময় নেতাকে এক নজর দেখতে গ্রামের বাড়িতে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দলীয় নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের উপস্থিতি বেড়ে যায়।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) বাদ জোহর উপজেলার আড়ানগর ইউনিয়নের লক্ষণপাড়া গ্রামে নিজ বাসভবনে মরহুমের জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়। এর আগে সকালে পত্নীতলা উপজেলা সেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল হকের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। মৃত্যুকালে মরহুমের বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।
গার্ড অফ অনারের এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগের এই বর্ষিয়ান নেতাকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন ধামইরহাট উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ধামইরহাট উপজেলা কমান্ড, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটি ও ধামইরহাট মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড।
স্থানীয় ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, আমিনুল হক আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকে নওগাঁ-২ (ধামইরহাট ও পত্নীতলা) আসনের এমপি প্রার্থী ছিলেন। রাজনীতির বর্ণাঢ্য জীবনে আমিনুল হক ১৯৮৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত একাধিকবার পত্নীতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়াও ২০০৬ সালে পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। এছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদকও ছিলেন তিনি। পরিবারে এক ছেলে ও স্ত্রীসহ বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে অসংখ্য দলীয় নেতাকর্মী ও গুনগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি। বর্ষিয়ান এই নেতার মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে পড়েছে।
আমিনুল হকের ছেলে আসিফুল হক বলেন, তার বাবা পারিবারিক কাজে গত সোমবার ঢাকায় যান। সেখানে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শুক্রবার রাত সাড়ে চারটায় ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে হৃদ ক্রিয়া বন্ধ হয়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
পত্নীতলা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিলটন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দুর্দিনে পত্নীতলা আওয়ামী লীগের তিনিই একমাত্র কান্ডারী ছিলেন। যার হাত ধরে আজ অনেকেই নেতা হয়েছেন। আজ হাইব্রিড নেতাদের কারণে তাকে সঠিক মূল্যায়ন করা হয়নি। একজন বর্ষীয়ান নেতার মৃত্যুতে পত্নীতলা উপজেলা ও পৌর আওয়ামিলীগ একজন ত্যাগী অভিভাবককে হারালো।’
ম্যানেজার এনামুল হক বলেন, ‘তিনি সব সময় নেতার কাছেই থাকতেন। এবং তার নেতার শেষ ইচ্ছে ছিল, একদিন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এই এলাকার মানুষের সেবা করবেন। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রতীক না পাওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছিলেন তিনি। নেতার মৃত্যুতে পত্নীতলা ও ধামইরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের অপূরণীয় ক্ষতি হলো।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আসমা খাতুন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজাহার আলী, ধামইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাহাউদ্দীন ফারুকী বিপিএম পিপিএম, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আখতারুল আলম, লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী অ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ মন্ডল, সবেক যুবনেতা এ্যডভোকেট আইয়ুব হোসেন, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাবিদ হোসেন মৃদু, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাহমুদ রেজা প্রমুখ।