নওগাঁ নিউজ ডেস্কঃ
স্থগিত হওয়া নওগাঁ-২ (পত্নীতলা-ধামইরহাট) আসনে শুরু হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। সোমবার ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে ভোট গ্রহণ। চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
প্রতিটি ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তাদের নিজ নিজ পছন্দের প্রার্থীর প্রতীকে নিজেদের ভোট প্রদান করেছেন। অনেক দিন পর ভোট পেয়ে ভোটাররা উৎসবমুখর ও আনন্দে ভোট প্রদান করছেন। ভোটের পরিবেশ সুন্দর রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল চোখে পড়ার মতো। অপরদিকে সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ শেষ করতে গ্রহণ করা হয়েছে ৪স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
সকালে পত্নীতলা উপজেলার ৫৬নং পুইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটাররা তাদের ভোট প্রদান করেন। সবার আগে ভোট দিয়ে শহিদুল আলম বেন্টু বলেন, খুব ভালো লাগছে। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরেছি।
তার মতো ৮০ বছরের ছলিম উদ্দীন ভোট দিতে এসে বলেন, ভোট দিতে আসতে পেরে খুব ভালো লাগছে। কারণ জাতীয় ভোট ৫ বছর পর আসে। তাই ভোট দেওয়া মিস করবো না। কারণ আগামীতে ভোট দেওয়ার সৌভাগ্য নাও হতে পারে।
এই কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ২ হাজার ৮৮০ জন। আমরা সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ন পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে ইতিমধ্যই সকল প্রস্তুতি শেষ করে ভোট গ্রহণ শুরু করেছি। আশা রাখি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতায় আমরা সুষ্ঠ, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মধ্যদিয়ে ভোট গ্রহণ শেষে ফলাফল প্রদান করতে পারবো।
পত্নীতলা উপজেলায় ১১ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৯৯ হাজার ১১৭ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৯৯ হাজার ২৭১ এবং নারী ভোটার সংখ্যা ৯৯ হাজার ৮৪৬ জন। নির্বাচনে ৭১ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও ৪০২ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ পোলিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ৮০৪ জন। ভোটের দিন ১২ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে।
অপরদিকে ধামইরহাট উপজেলায় আট ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৫৭ হাজার ১৫ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭৮ হাজার ৩০১ জন, নারী ৭৮ হাজার ৭১৩ ও ট্রান্সজেন্ডার ১ জন। নির্বাচনে ৫৩ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও ৩০৪ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ পোলিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ৬০৮ জন। এবারই প্রথমবারের মতো ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হয়। ভোটের দিন পৌরসভাসহ প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে ৯ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন।
নওগাঁ জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র গাজিউর রহমান (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) জানান, নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৬ জন ও সাধারণ কেন্দ্রে ১৫ জন করে পুলিশ ও আনসার সদস্য রয়েছে। এছাড়াও গড়ে প্রতি চারটি কেন্দ্রের জন্য একটি করে পুলিশের মোবাইল টিম রয়েছে। রয়েছে স্ট্রাইকিং টিম ও রিজার্ভ টিম। পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে সকল সিনিয়র অফিসারও রয়েছেন নির্বাচনী দায়িত্বে। এর বাইরেও রয়েছে সাদা পোশাকের পুলিশ। র্যাব, বিজিবি, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটগণ রয়েছেন নির্বাচনী দায়িত্বে। এক কথায় পুরো এলাকাকে নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে যাতে ভোটারগণ নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে এসে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন। কেও নূন্যতম কোন প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করলে তার বিরুদ্ধে কঠোরতম আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবার নওগাঁ-২ (পত্নীতলা-ধামইরহাট) আসনে ভোটযুদ্ধে লড়বেন ৪জন প্রার্থী। ভোটের মাঠে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবেক এমপি শহীদুজ্জামান সরকার বাবলু। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন ট্রাক প্রতীকের আখতারুল আলম, ঈগল প্রতীকের মেহেদী মাহমুদ রেজা ও লাঙ্গল প্রতীকের তোফাজ্জল হোসেন। স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চারজন থাকলেও মূল লড়াই হবে নৌকার প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ট্রাক প্রতীকের প্রার্থীর মধ্যে।