1. admin@dailynaogaonnews.com : admin :
শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নওগাঁয় নেসকোর প্রিপেইড কার্ড মিটারে ভোগান্তী; চালু না করার দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক আরবী ভাষা দিবসে আমাদের প্রত্যাশা ধামইরহাটে দুস্থ ও এতিম দের মাঝে দুম্বার মাংস বিতরণ করলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান সাপাহারে বিএনপি নেতা মাহমুদুস সালেহীনের ব্যক্তিগত উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ আঠারো ডিসেম্বর নওগাঁয় হানাদার মুক্ত দিবস পালিত থ্রি স্টার ক্লাবের আয়োজনে নওগাঁর চকচাঁপাই কলেজ মাঠে ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত ধামইরহাটে উদ্যোক্তা তৈরিতে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে সামাজিক সংগঠন “মানবসেবা “ একুশে পরিষদ নওগাঁ’র আয়োজনে বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী পালিত নওগাঁর ধামইরহাটে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ বায়োজিদসহ সকল শহীদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা নওগাঁয় রোভার স্কাউটের তাঁবুবাস ক্যাম্পের উদ্বোধন

ফারাক্কা বাঁধের গেট খুলে দিলে বাংলাদেশের যেসব অঞ্চলে প্রভাব পরবে

  • প্রকাশিত : সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৪
  • ৫৭ বার পঠিত

নওগাঁ নিউজ ডেস্কঃ
ফারাক্কা বাঁধ চাপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলায় গঙ্গা নদীর ওপর অবস্থিত। ১৯৬১ সালে গঙ্গা নদীর ওপর এই বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। নির্মাণ সম্পন্ন হয় ১৯৭৪ সালের ডিসেম্বরে। ১৯৭৫ সালের ২১ এপ্রিল বাঁধটি চালু হয়।

ফারাক্কা বাঁধের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার বা ৭ হাজার ৩শ ফুট। এটি শুধু একটি বাঁধ নয়, যা একটি সড়ক ও রেলসেতু হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।
বাঁধটিতে মোট ১০৯টি গেট রয়েছে। ফারাক্কা সুপার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে পানি এই বাঁধ থেকেই সরবরাহ করা হয়। এই বাঁধের উপর দিয়ে গিয়েছে জাতীয় সড়ক ও রেলপথ।
১৯৫০-৬০ দশকে কলকাতা বন্দরের কাছে ফারাক্কা বাঁধ তৈরি করা হয়। শুষ্ক মৌসুমে ফারাক্কা বাঁধ গঙ্গার ৪০,০০০ ঘনফুট/সে পানি হুগলি নদীর দিকে চালিত করে। তৎকালীন হিন্দুস্তান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে তৎকালীন সোভিয়েন ইউনিয়নের সহায়তায় বাঁধটি তৈরি করে।

ফারাক্কা বাঁধটি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের খুব কাছে, গঙ্গা নদীর উপর অবস্থিত। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল গঙ্গার পানি ধরে রাখা এবং পশ্চিমবঙ্গের ভাগীরথী নদীতে প্রবাহিত করে হুগলি নদীর অববাহিকাকে আরও জীবন্ত রাখা। কিন্তু এর প্রভাব কেবল ভারতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং বাংলাদেশের উপরও ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। ফারাক্কা বাঁধের কারণে গঙ্গার পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে এবং এর ফলে বাংলাদেশের অনেক নদী শুকিয়ে যাচ্ছে, আবার বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়ে বন্যার সৃষ্টি করছে।

ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেট খুলে দেওয়ার ফলে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল বন্যার ঝুঁকিতে পড়েছে। এই ঝুঁকি শুধুমাত্র প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, বরং এর সাথে যুক্ত রয়েছে অর্থনৈতিক, সামাজিক, এবং পরিবেশগত ক্ষতি। এ ধরনের বন্যার ফলে নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলোতে জনজীবন বিপর্যস্ত হতে পারে, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে এবং অনেক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়তে পারে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চল এর প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফারাক্কা বাঁধের গেট খোলার কারণে বাংলাদেশের কোন কোন অঞ্চল বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে এবং সেই সাথে এর সম্ভাব্য প্রভাব সমূহ। বন্যার ঝুঁকিতে থাকা অঞ্চলগুলো-

১.কুড়িগ্রাম জেলা
কুড়িগ্রাম জেলা বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বন্যাপ্রবণ জেলা। ফারাক্কা বাঁধের গেট খুলে দেওয়ার ফলে এখানকার তিস্তা, ধরলা এবং ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। এতে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে, ফুলবাড়ী, উলিপুর, এবং চিলমারী উপজেলার কিছু অংশে বন্যার পানি ঢুকে পড়তে পারে। এর ফলে এখানে থাকা বাড়িঘর, ফসলি জমি, এবং রাস্তাঘাট ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

২.লালমনিরহাট জেলা
লালমনিরহাট জেলা তিস্তা নদীর পাশে অবস্থিত, যা ফারাক্কা বাঁধের গেট খোলার ফলে সরাসরি প্রভাবিত হতে পারে। অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে জেলার হাতীবান্ধা, আদিতমারী, এবং পাটগ্রাম উপজেলায় বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এখানকার কৃষিজমি ও ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে তলিয়ে যেতে পারে, যা স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রাকে কঠিন করে তুলবে।

৩.রংপুর এবং গাইবান্ধা জেলা
এই দুই জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদী ফারাক্কা বাঁধের গেট খোলার ফলে বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশেষ করে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, এবং সাঘাটা উপজেলার নিন্মাঞ্চলগুলো বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে। রংপুর শহর এবং এর আশেপাশের এলাকাগুলোও বন্যার পানিতে তলিয়ে যেতে পারে। এই জেলাগুলোর বড় অংশ কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির ওপর নির্ভরশীল, ফলে বন্যা হলে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হবে।

৪.সিরাজগঞ্জ জেলা
সিরাজগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত এবং যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত। যমুনা নদীতে ফারাক্কা বাঁধের পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর, চৌহালি, এবং বেলকুচি উপজেলায় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে এখানকার মানুষদের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হতে পারে এবং এলাকার অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

৫.বগুড়া এবং জামালপুর জেলা
এই দুই জেলা যমুনা নদীর কাছাকাছি অবস্থান করছে এবং ফারাক্কা বাঁধের অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশেষ করে জামালপুর জেলার ইসলামপুর এবং দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার কিছু এলাকা বন্যার সম্ভাবনায় রয়েছে। বগুড়া জেলার ধুনট এবং সারিয়াকান্দি উপজেলাও বন্যার পানিতে প্লাবিত হতে পারে।

৬.টাঙ্গাইল জেলা
টাঙ্গাইল জেলা, বিশেষ করে কালিহাতি এবং ভূঞাপুর উপজেলা, যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত। ফারাক্কা বাঁধের গেট খোলার ফলে এই জেলায়ও বন্যার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। অতিরিক্ত পানির চাপের ফলে যমুনা নদী উপচে এলাকার বিভিন্ন স্থানে বন্যার সৃষ্টি করতে পারে। টাঙ্গাইল জেলার পূর্বাঞ্চলীয় কিছু এলাকাও বন্যার কবলে পড়তে পারে, যা কৃষি উৎপাদন এবং স্থানীয় জীবনযাত্রায় ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।

ফারাক্কা বাঁধের গেট খোলার ফলে সৃষ্ট বন্যায় বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলে অর্থনৈতিক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফসলের ব্যাপক ক্ষতি, অবকাঠামোর ক্ষতি, এবং গৃহহীনতার ফলে মানুষের জীবনযাত্রার মান কমে যেতে পারে। এছাড়া, কৃষকরা তাদের ফসল হারানোর ফলে ঋণগ্রস্ত হতে পারে এবং এর প্রভাবে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

বন্যার ফলে পরিবেশগত দিক থেকে ক্ষতির সম্ভাবনাও রয়েছে। নদী তীরবর্তী এলাকার মাটি ক্ষয় হতে পারে, ফসলের ক্ষেত্রগুলিতে পানি জমে থাকতে পারে এবং এই সবকিছুই পরিবেশের ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া, নদী তীরবর্তী জীববৈচিত্র্যের ওপরও বন্যার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

বন্যার ফলে স্থানীয় মানুষের স্বাস্থ্যের ওপরও প্রভাব পড়তে পারে। দূষিত পানি থেকে রোগের সংক্রমণ হতে পারে, বিশেষ করে ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েড এবং ডেঙ্গুর মতো রোগের প্রাদুর্ভাব হতে পারে। এছাড়া, বন্যার ফলে সাপ এবং অন্যান্য বিষাক্ত প্রাণীর সাথে মানুষের যোগাযোগ বৃদ্ধি পায়, যা স্বাস্থ্যঝুঁকিকে বাড়িয়ে তোলে।

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© All rights reserved © 2022 Daily Naogaonnews
Theme Customized By Shakil IT Park