সাদ্দাম হোসেন,মহাদেবপুর প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার শিবগঞ্জ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখা হয়েছে গত প্রায় এক বছর। সেই থেকে এই বিদ্যালয়ের পাঁচশ’ কোমলমতি শিশুর খেলাধূলা বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে তাদের আত্রাই নদীর তীরে বেড়ানোর ও বিনোদনের একমাত্র স্থান। শিশুদের অভিভাবকেরা এনিয়ে নানান কথা বললেও প্রভাবশালীদের তৎপরতায় ঠিকাদার এ মাঠটি ফাঁকা করে দেয়ার ব্যবস্থা করছেনা। তারা একপ্রকার গায়ের জোড়েই এটি দখল করেছেন। এজন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোন অনুমতি নেয়ারও প্রয়োজন মনে করেননি। স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে ওই এলাকায় গেলে মাঠটিতে বালু, ইট, পাথর, খোয়া আর বিভিন্ন রকম যানবাহনের সারি দেখা যায়। এখানে ঠিকাদারের কয়েকটি অস্থায়ী আধাপাকা স্থাপনাও নির্মাণ করা হয়েছে। এলাকার কয়েকজন শিশু শিক্ষার্থী আর অভিভাবক জানালেন প্রায় একবছর ধরে এই অবস্থা। সংশ্লিষ্ট সকলকে বিষয়টি জানিয়েও কোন কাজ হয়নি। ঠিকাদারের নির্মিত ঘরে পাওয়া গেলো একজন এটেন্ডেন্টকে। ঠিকাদারের ফোন নম্বর চাইলে তিনি দিতে অস্বীকার করেন। তিনি তার নিজের ফোন থেকে সাজ্জাদ কাদির নামে একজনের সাথে কথা বলেন। তিনি এই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট অফিসার বলে জানান। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনিও কথা বলতে অস্বীকার করেন। পরে ওই এটেন্ডেন্ট প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার আখতারুজ্জামান তারেকের মোবাইলফোনে কল দিয়ে কথা বলান। মাঠে নির্মাণ সামগ্রী রাখার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি উত্তর না দিয়ে পরে দেখা করবেন বলে জানান। বিষয়টি জানতে শিবগঞ্জ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে প্রধান শিক্ষককে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইলফোনে রিং দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা জানান, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে এলাকার বড় নেতারা ঠিকাদারকে মাঠটি ব্যবহার করতে দিয়েছেন। জানতে চাইলে মোবাইলফোনে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাফিয়া আকতার অপু জানান, বিদ্যালয় মাঠে নির্মাণ সামগ্রী রাখা খুবই দু:খজনক। ঠিকাদার এব্যাপারে কোন অনুমতি নেননি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগ আত্রাই নদীর পূর্বপাড়ে মহাদেবপুর উপজেলার শিবগঞ্জ থেকে মান্দা ফেরিঘাট পর্যন্ত মোট ১৮ কিলোমিটার নদীর বাঁধের সড়ক সংস্কার করছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রিলাইবল বিল্ডার্স। সড়ক ও জনপথ বিভাগ নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পত্নীতলা জোনের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক জানান, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে ওই মাঠটি ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয় হাট কমিটি ও নেতাদের সাথে এব্যাপারে কথা হয়েছে। তবে মাঠটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বলে তার জানা ছিলনা। অভিভাবকেরা অবিলম্বে এই মাঠ খালি করে অন্য কোন জমি ভাড়া নিয়ে নির্মাণ সামগ্রী রাখার দাবী জানিয়েছেন।