সুবীর দাস,নওগাঁঃ আর কিছুদিন বাদেই সনাতন ধর্মাম্বলীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব সারদিয় দুর্গাপূজা। নওগাঁর প্রতিমা শিল্পীরা এ উৎসবকে ঘিরে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে।
নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছে তারা। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিমা তৈরির সরঞ্জামের দাম বাড়ায় বেড়েছে খরচও।
আগামী ২০ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। হিন্দুশাস্ত্রমতে এবার দেবী দুর্গা ধরনিতে আসা ও যাওয়া উভয়ে হবে ঘোড়ায়। মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ।
কারিগরের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় রূপ পাচ্ছে দেবী দুর্গায়। সুনিপুণ কাজে প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে প্রতিমাগুলো। জেলায় প্রায় শতাধিক কারিগর সারা বছর বিভিন্ন প্রতিমা তৈরি করলেও দুর্গাপূজায় তাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। রাত-দিন কাজ করে দেবী-দুর্গাসহ বিভিন্ন প্রতিমা তৈরি করছেন তারা। কয়েকদিন পর এসব প্রতিমা চলে যাবে মণ্ডপে মণ্ডপে। ঢাক-ঢোল, কাসা আর শঙ্ক ধ্বনিতে মাতবেন ভক্তরা।
জানা গেছে, এ বছর জেলার ১১টি উপজেলায় ৮২৭টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রায় শতাধিক কারিগর এসব প্রতিমা তৈরি করছেন। কারিগরদের সঙ্গে কাজ করছেন আরো প্রায় ৫০০ শ্রমিক। এ বছর জেলায় প্রায় ৪ কোটি টাকার প্রতিমা বাণিজ্য হবে।
নওগাঁ শহরের কালিতলা মহল্লার বুড়া মা শিল্পালয়ে প্রতিমা কারিগর খোকন পাল বলেন, এবছর ১৫টি প্রতিমা তৈরি করছি। প্রতিটি প্রতিমার দাম প্রায় ২০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা। গত কয়েক বছর থেকে সবকিছুর মতো প্রতিমা তৈরির সরঞ্জামের দাম বেড়েছে। গত বছর যে প্রতিমা ৩০ হাজার টাকায় তৈরি করা হয়েছিল। এ বছরও ওই দামেই তৈরি করা হচ্ছে।
তবে প্রতিমা তৈরির খরচ বাড়লেও আমাদের মজুরি ও আয় বাড়েনি। বাড়তি মজুরি দিতে চাচ্ছে না। এতে লাভের অঙ্কটাও কম হবে বলে জানান প্রতিমা কারিগর। এ কাজ করে লাভের অংশ দিয়ে সারা বছর ভরনপোষণ চলে।
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট নওগাঁ জেলার সভাপতি ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সোমেন কুন্ডু বলেন, এ বছর জেলায় ৮২৬টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। বৈষিক মহামারিতে গত ৩ বছর দুর্গো উৎসবে ভাটা পড়েছিল। তবে এ বছর বর্ণিল আয়োজনে সারদীয় দুর্গা উৎসব পালনের আশা সনাতন ধর্মাম্বলীদের। এ উৎসবকে ঘিরে বিভিন্ন ধর্মাম্বলীদের মাঝে আনন্দ ছড়িয়ে পড়বে। সম্প্রতির বন্ধন অটুট হবে। নিরাপত্তার চাদরে মণ্ডপগুলো ঢাকা থাকবে বলে জানান হিন্দু মহাজোট এ নেতা।