মুজাহিদ হোসেন, নওগাঁ
নওগাঁর বদলগাছীতে ডিলাররা ব্যাংকে টাকা জমা দিয়েও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল তুলতে পারছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। তারা ব্যাংক চালান রশিদ জমা করতে পারছেন না উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে। আট দিন অতিবাহিত হলেও এর সমাধান না হওয়ায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৭৭৫৫ জন উপকারভোগী চাল পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।
উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা যায়, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির জন্য উপজেলার আটটি ইউনিয়নে দুটি করে ১৬ জন ডিলার নিয়োগ রয়েছে।
৩১ আগস্ট উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ইস্যু করা হয় সব ডিলারকে। এতে চলতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে ব্যাংকে টাকা জমা করে চাল উত্তোলন করার জন্য বলা হয়। সে মোতাবেক ডিলাররা চলতি মাসের ৯ তারিখে ব্যাংকে টাকা জমা করার জন্য খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে গোপন কোড নম্বর চাইতে গেলে। তখন উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক সাবরিন মোস্তারী মৌখিকভাবে জানান, সব ডিলারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ এসেছে।বিষয়টি নিয়ে উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটির মিটিং হবে। মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী আপনারা ব্যাংকে টাকা জমা করবেন। এ বিষয়ে ৯ তারিখে উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটির সভাপতি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব হাসানের উপস্থিতিতে তার কার্যালয়ে জরুরি সভা হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত সভা শেষে ডিলারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।ওই কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের আগ পর্যন্ত ডিলারদের ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা জমা দিয়ে চালান কপি খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে জমা দিতে বলা হয়। উপজেলা বদলগাছী গ্রামের উপকারভোগী মৌসুমী আক্তার জানান, প্রতি মাসের ১০-১২ তারিখের মধ্যে আমরা ১৫ টাকা কেজির চাল পেতাম। মাসের ১৭ দিন চলে গেলেও চাল পাচ্ছি না। যা আমার পরিবারের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ডাঙ্গিসাড়া গ্রামের রশিদা, গাজীমদ্দীন, বয়তুলসহ অনেক উপকারভোগীও একই কষ্টের কথা জানিয়েছেন।তাদের দাবি- আমরা গরিব মানুষ, চাল পেলেই পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়েপরে বাঁচতে পারি। এতেই আমরা সুখী। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার এরশাদ, রানা, মেহেদি, জামিলসহ অনেকেই জানান, উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক আমাদের ব্যাংক চালান জমা নিচ্ছেন না।
উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক সাবরিন মোস্তারী বলেন, আগামী ২২ তারিখ পর্যন্ত সময় আছে। উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের সাথে কথা হয়েছে। বিষয়টি অতিদ্রুত সমাধান হবে।
উপজেলা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব হাসানের কাছে জানতে মোবাইলে ফোনে ফোন দিলে ফোন বন্ধ থাকায় কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক ফরহাদ খন্দকার জানান, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল উত্তোলনের সময় ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে উপকারভোগীদের চাল বিতরণ করার সুযোগ রয়েছে। ডিলাররা এ সময়ের মধ্যে চাল উত্তোলন ও বিতরণ করতে পারবে।