গোলজার রহমান,ধামইরহাট প্রতিনিধি:নওগাঁর ধামইরহাটে মাঠ জুড়ে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। দেশের শস্যভান্ডার খ্যাত উত্তরবঙ্গের জেলা নওগাঁ,কৃষি প্রধান নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশায় এলাকার কৃষকদের। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকেরা সঠিক সময়ে আমন ধানের চারা রোপণ ও পরিচর্যার কারণে মাঠ জুড়ে বাতাসে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। গত বছরের মতো এবারও ধানের ভালো দাম পাওয়ার অপেক্ষায় দিন গুনছেন কৃষকেরা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে,এ বছর উপজেলায় রোপা আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ হাজার ৪শ ৫৫ হেক্টর মেট্রিকটন। এগুলোর মধ্যে উপসী জাতের ধান ১৯ হাজার ৬শ ৫৫ হেক্টর, হাইব্রিড ২১০ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ধান ২৯০ হেক্টর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ২০ হাজার ৪শ ৭০ হেক্টর মেট্রিকটন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বুধবার (২ নভেম্বর )সকালে ধামইরহাট উপজেলার ধামইরহাট পৌর, আলামপুর ইউনিয়ন, খেলনা, ইসবপুর, জাহানপুর, ধামইরহাট, উমার, আড়ানগর ও আগ্রাদ্বীগুন ইউনিয়ন ঘুরে আমন ধানের বাম্পার ফলন দেখা গেছে। সঠিক সময়ে চাড়া রোপণ সার, বিষ ও বৃষ্টির পানি পাওয়ায় এবছর উপজেলা জুড়ে আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে পরিমিত সার, কীটনাশক ব্যবহার করে রোগবালাই থেকে যেন আমন ধানকে মুক্ত করা যায় এ বিষয়ের ওপর বিভিন্ন জায়গায় উঠান বৈঠক ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পরিমিত সার ব্যবহার বিপিএইচ, মাজরা, বিএলবিসহ আমন ধানের অন্যান্য রোগ বালাই নির্মূলের জন্য আলোকফাঁদসহ বিভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করায় গত বছরের চাইতে এবার আমন ধানের চাষাবাদে সফলতা পেয়েছেন তারা। উপজেলার ৩নং আলামপুর আওতাধীন বীরগ্ৰাম এলাকার ধান চাষী মো. রেজুয়ান হোসেন বাবু (৪১) জানান, ‘তিনি বারো বিঘা জমির ওপর রোপ আমন ধান রোপণ করেছেন এর মধ্যে ৬বিঘা স্বর্ণা-৫ ও বাকি ৬বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান রোপণ করেছেন। এতে সার বিষ ও লেবারসহ প্রতি বিঘা জমিতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা। কার্তিক মাসের ২৫ তারিখে হাইব্রিড ও অগ্রহায়ণ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে স্বর্ণা-৫ ধান কাটা শুরু হবে বলে তিনি জানান।’অপর এক ধান চাষী মো. ছাইদুল ইসলাম (৪৩) বলেন, ‘উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সঠিক সময়ে সার, বিষ পাওয়ায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতি বিঘা জমি থেকে ৩০ থেকে ৩২মন ধান পাওয়া যেতে পারে।এতে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারব আশা করি উপজেলা কৃষি অফিসার তৌফিক আল জুবায়ের বলেন, ‘এবছর উপজেলা পর্যায়ে ৮৫০ জন কৃষককে কৃষি প্রণোদনার আওতায় এনে প্রত্যেক কৃষককে এক বিঘা জমিতে চাষাবাদের জন্য ৫ কেজি বীজ, ডিএপি এবং এমওপি সার বিতরণসহ উঠান বৈঠক, লিফলেট বিতরণ ও প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত ১৫ হেক্টর জমিতে সারে ৩ মেট্রিকটন রোপা আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।’